৫ শত কোটি টাকা অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে বনমন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরণ ১০বছর অতি বাহিত হলেও নবাবগঞ্জের জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নে বরাদ্দ পাওয়া যায়নি ।

Spread the love


নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে এম রুহুল আমিন প্রধান:
৫ শত কোটি টাকা অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে বনমন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরণ১০বছর অতি বাহিত হলেও নবাবগঞ্জের জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নে বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এদিকে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের চরকাই রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার জানান জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড উল্লেখ করে ৫শত কোটি টাকার অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে বন মন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।তিনি আরও জানান অর্থ বরাদ্দ পেলেই জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে জাতীয় উদ্যান দশ বছর আগে দাপ্তরিক মর্যাদা পেয়েছে। এখনও বাস্তবায়ন কাজ সম্পন্ন হয়নি। দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় আগের যে শালবন তার সঙ্গে বর্তমানে ঘোষিত জাতীয় উদ্যানের পার্থক্য নেই। ২০১০ সালের নভেম্বরে বন টিকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হলেও বাস্তবায়নের কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। জাতীয় উদ্যান ঘোষিত হওয়ার পর স্থানীয়রা যে পরিমাণ খুশি হয়েছিলেন, দশ বছরেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য (দিনাজপুর-৬) শিবলী সাদিক বলেন, উদ্যানের কাজ শুরুর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সংসদেও উত্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইতিবাচক আশ্বাস পেয়েছি। আশা করি, খুব শিগগির কাজ শুরু হবে। জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর যা হওয়ার কথা: বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) আইন ১৯৭৪ইং (নং পবম/বন শা-২/০২/জাতীয় উদ্যান/১০/ ২০১০/৫১০) অনুযায়ী ৫১৭.৬১ হেক্টর এই বনের উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং পর্যটন সুবিধাদির উন্নয়ন নিশ্চিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।বনের ভেতরের পুকুরগুলোর পাঁচ হাজার ঘনফুট মাটি খননের কথা রয়েছে। যাতায়াতের জন্য দুই কিলোমিটার রাস্তা করার কথা থাকলেও আধা কিলোমিটার রাস্তা হওয়ার পর তা থেমে আছে। কাঁচা হওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই রাস্তায় চলাচলের উপায় থাকে না। অথচ স্থানীয়দের মতে, বর্ষা মৌসুমেই বেশি উপভোগ্য এ উদ্যান ও পাশের বিলটি। আধুনিক পিকনিক স্পট, ওপর থেকে পুরো বন ও আশুড়ার বিলকে এক নজরে দেখতে ওয়াচ টাওয়ার, পশু-পাখি প্রজনন কেন্দ্র, বনের বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ, দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত এসবের কাজ শুরু হয়নি। শোভাবর্ধনের জন্য গাছ লাগানো হলেও পরিচর্যার কারণে অনেক গাছ মারা গেছে।দিনাজপুর চরকাই রেঞ্জে শালবনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলের অভাবে পরিচর্যা সঠিকভাবে সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান একাধিক বন কর্মকর্তা। বনের ভেতরে নবাবগঞ্জ বিট কর্মকর্তার কার্যালয়টিও ‘জীর্ণ বাড়ি’র মতো হয়ে আছে। বনের পরিবেশ ও সম্পদ রক্ষায় বনে পাতা সংগ্রহ, গাছ কাটা, বনের ভেতরে আগুন জ্বালানো, বন্যপ্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এসব কাজ এখনও চলছে বলেও অভিযোগ করেন বনের পাশের একাধিক বাসিন্দা। বন পরিদর্শনে গিয়েও এমন চিত্র নজরে পড়ে। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি এ কাজের সঙ্গে যুক্ত।বনে যা আছে : পুরো বনটিই একটি বৃহৎ শালবাগান। এ ছাড়া উইপিং, বেলি, শেফালি, কামিনী, মুর্চা, রাধাচূড়া, কাঁঠালিচাঁপা, রংগনসহ বনে প্রায় পাঁচ হাজার শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আছে। বেতবাগান, বিরল প্রজাতির বাঁশবাগান, পশুখাদ্য বাগান ও ঔষধি বাগান শালবনটিকে আরও আকর্ষণীয় করেছে। বনের গভীরে হাজারো পাখির কিচিরমিচির শব্দ শরীরে শিহরণ এনে দেয়। বনের প্রধান আকর্ষণ পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আশুড়ার বিল। স্থানীয়দের মতে, বিশাল এ বিলের ৮০টি দ্বার বলেই এর নামকরণ হয়েছে আশুড়ার বিল। বিলের লাল পদ্ম, শাপলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ ফুল দর্শনার্থীদের বিশেষ আকর্ষণ। বিলের পাড়ে নতুন পাঁচটি বসার জায়গা করা হয়েছে।জাতীয় উদ্যানের বাস্তবায়ন না হলেও আশাহত হচ্ছেন না নবাবগঞ্জের বাসিন্দারা। নবাবগঞ্জ কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান জাতীয় উদ্যান সহ আশুরার বিলে আধুনিকায়নে উন্নয়ন মূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হলে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমন ঘটবে এবং স্থানীয় বেকার শিক্ষিত নারী
পুরুষের কর্মসংস্থান হবে।


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।