নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর) থেকে সৈয়দ হারুনুর রশীদ।
করোনা কালেও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে থেমে নেই চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা। স্থানীয়দের ভাষায় সম্প্রতি চোরাচালান ও মাদক পাচারকারীরা এক প্রকার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পাচারকারীরা হিলি ও বিরামপুর সিমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে নবাবগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে এসে বিভিন্ন যানবাহনে নানা কৌশল অবলম্বনে উপজেলার বিভিন্ন রুট ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে তা পাচার করছে।হিলি ও বিরামপুর সিমান্ত এলাকা থেকে পাচারকৃত পণ্য ওই দুই উপজেলা ঘেষা নবাবগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে পাচার করে নিয়ে যাওয়ার সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছে কিছু কিছু মাদক ও ব্যবসায়ী।
আবার কোন কোন পাচার কারী সেসব বহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্যত্রেও ধরা পড়ছে। সচেতন মহল বলছেন ঢাকা গাজিপুর বা নারায়নগঞ্জ থেকে এলাকায় আগতদের মাধ্যমে যেমন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের আশংকা রয়েছে তেমনি আশংকা রয়েছে পাচার কারীদের মাধ্যমেও। সে কারনে তাদের প্রতি প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। জানা যায় বগুড়ার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর গত ১১ জুন অভিযান পরিচালনা করে শেরপুর এলাকায় একটি কোচ থেকে নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদনগর মন্ডলপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানাকে ২০০ বোতল ফেনসিডিল সহ গ্রেফতার করে।
২৫ মে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার গুনবিহার গ্রাম থেকে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার সহ মরিয়ম বেগম নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে। ৬ মে দিনাজপুরের র্যাব সদস্যরা উপজেলার ভাগলপুর নামক স্থান থেকে ১৯৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার সহ মাসুদরানা, শাহিনুর ইসলাম ও মমিনুল হক নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে। ৫ মে রাতে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ একটি ট্রাক থেকে ২১৪ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার সহ মানিক, সজিব ও মশফিকুর নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে। বলতে গেলে যে হারে পাচার হচ্ছে তার তুলনায় ধরা পড়ার বিষয়টি একবারে কম।
স্থানীয়দের ভাষায় ২০১৭ সালে দিনাজপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার হামিদুল আলম নবাবগঞ্জ উপজেলার মাদক পাচারকারী সেবনকারী ও ব্যবসায়ীদের নাম সংগ্রহ করে মাদক ছেড়ে তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আত্ম সমপর্নের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি তাদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি বই তৈরী করেছিলেন যার নাম দেয়া হয়েছিল” আলোকচ্ছটা”।তিনি ওই সময় মাদকের সঙ্গে জড়িত অসহায় দুস্থদের মাঝে কর্ম করে খাওয়া জন্য সেলাই মেশিন প্রদান করেছিলেন। করেছিলেন জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের সহায়তা প্রদান। তখনও বেশ কিছু মাদক স¤্রাট আত্ম সমর্পন না করে গা ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারাও বাধ্য হয়ে আত্ম সমর্পন করে মাদক ছেড়েছিল। সামপ্রতিক সময়ে এসে আবারও তারা সচল হয়ে উঠেছে। পুরাতুনেরা ছাড়াও নতুন করে অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্যরাও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এলাকার সচেতন মহল এসব পাচারকারীদের আবারও চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে সমাজকে মাদক মুক্ত করতে বর্তমান পুলিশ সুপারের শুভ দৃষ্টি কামনা করেছেন#
মন্তব্য করুন