জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃওমর আলী বাবু >
কালাই উপজেলার তেলিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উদয়পুর ইউনিয়নের তেলিহার গ্রামের সোলায়মান আলী নামে এক ব্যক্তি তেলিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর এমন লিখিত অভিযোগ করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায় উদয়পুর ইউনিয়নের তেলিহার গ্রামের জনৈক সোলায়মান আলী স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অভিযোগ দাখিল করলে বিষয়টি একজন কর্মকর্তার উপর তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান করে জানা গেছে , গত ২০১৯ এবং ২০২০ এই দুই শিক্ষা বর্ষে প্রকৃত শিক্ষার্থীর তুলনায় শতাধিক সেট বই বেশি উত্তোলন করা হয়েছে। ২০১৮-২০১৯ এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে প্রাপ্ত ব্যাপক বরাদ্দের বিপরীতে কাজের গুণগত মান ও দৃশ্যমান হবার বিষয়টি প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
এছাড়াও উক্ত বিদ্যালয়ের খাতা-কলমে দেখানো শিক্ষার্থীর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। বিভিন্ন সময়ের ক্লাস অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা , উপস্থিতি , পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে দেখা যায় বিদ্যালয়টির প্রকৃত শিক্ষার্থীর চেয়ে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ জনের মতো বেশি , যা সরকারি অর্থ অপচয়ের মধ্যে পড়ে। এছাড়া সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্য এবং অনাকাঙ্খিত ব্যয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে । সরকারি অর্থ ব্যয়ের ভাউচারে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টিও রয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। শিক্ষক উপস্থিতি ও শিক্ষার্থী উপস্থিতি সংক্রান্ত অনিয়ম সহ , বিদ্যালেয়র অন্যান্য স্বাভাবিক কার্যক্রমের অনিয়ম , বিভিন্ন বরাদ্দের ব্যয় সম্পর্কিত অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইতিয়ারা পারভীন বলেন, তেলিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হলে অভিযোগগুলোর সত্যতা খুঁজে পান। এবং এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে কারন দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে, চিঠির উত্তর পেলেই আমরা জেলা শিক্ষা অফিসে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করব।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন জানান, তেলিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ আসলে আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বলি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এ বিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন যার লিখিত রিপোর্ট আমাকে জমা দেয় এবং তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য প্রমানিত হলে বিভাগীয়ভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবহিত করব। এছাড়াও অবাক হওয়ার মত বিষয় হল যে ঐ বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২৪ জন কিন্তু উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৬ জন যা সরকারী অর্থ অপচয়ের সামিল।
উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তেলিহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি অসুস্থ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবী করেন।
মন্তব্য করুন