জয়পুরহাট প্রতিনিধি ঃ ওমর আলী বাবু >
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বরাদ্দ অর্থ থেকে তিনি কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি দাম দিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের তথ্য চিত্র প্রদর্শনী কেনা হয়েছে নিম্নমানের সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকার একটি প্রকাশনী কোম্পানির বিল ভাউচার।
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় প্রতিটি মেশিন কেনা বাবদ ১৭ হাজার থেকে ২১ হাজার টাকার অবৈধ বাণিজ্য হয়েছে। হাজিরা মেশিন চালুর প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় ১০ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা। অসাধু এ চক্রের নেতৃত্ব দিয়েছেন পাঁচবিবি উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজী জাহাঙ্গীর আলমসহ উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ রনি ও ভূইডোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে আয়েশা সিদ্দিকা তনুর স্বামী পলাশ।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা দেয় সরকার। সে অনুযায়ী, গত বছরের ২৮ এপ্রিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ডিপিইও) চিঠি দেয়া হয়। প্রথম ধাপে গত বছরের ২৬ জুন স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ করে সারাদেশে নির্দেশনা পাঠানো হয়। ১৩ অক্টোবর আবারও নতুন করে স্পেসিফিকেশন দেয়া হয়। চিঠিতে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি- ৪) স্লিপ ফান্ড থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিভাইস (ডিজিটাল হাজিরা মেশিন) কিনতে বলা হয়।
বিভিন্ন স্কুল থেকে জানা গেছে, বাজারদর অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন অনুসরণ করে কেনার নির্দেশ উপেক্ষা করে পাঁচবিবি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ রনি ও ভূইডোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে আয়েশা সিদ্দিকা তনুর স্বামী পলাশ অতিরিক্ত দামে ওই মেশিন কিনতে তৎপর হয়। এ চক্রই নিম্নমানের মেশিন কিনতে বাধ্য করে বিদ্যালয় প্রধানদের। সূত্রে জানা যায় তকঞ ঊঈঙ ক৪০ মেশিন যার বাজার মূল্য ৬ হাজার টাকা অথচ প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১৭ হাজার ৫শ টাকা থেকে ২১ হাজার টাকা পযর্ন্ত।
এছাড়াও প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থীর মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণার তৈরীর নির্দেশনা থাকলেও সে নির্দেশ উপেক্ষা করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজী জাহাঙ্গীর আলম ভূয়া প্রজ্ঞাপন তৈরী করে প্রত্যকটি স্কুলে নিম্নমানের ছবি সরবরাহ করেন। এখান থেকেও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে সাড়ে ৩ লক্ষ্য টাকা। এর নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমানুল্লাহ রনিসহ কয়েকজনের একটি অসাধু চক্র।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজী জাহাঙ্গীর আলম কৌশলে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে স্থানীয়ভাবে ৬০ টি করে ছবি প্রিন্ট করে ঢাকার একটি প্রকাশনী পুথিনিলয় এর নাম ব্যবহার করে ভূয়া বিল ভাউচার করেন। স্থানীয়ভাবে ৬০ টি ছবির মূল্য ৬ হাজার ৫শ টাকা অথচ প্রত্যেকটা স্কুল থেকে নেওয়া হয়েছে ১০হাজার ২ শ টাকা।
মন্তব্য করুন