মাজরা পোকা ও ইঁদুরের উপদ্রোবে দিনাজপুরের ৪ উপজেলায় সুগন্ধি ব্রি ধান   উৎপাদন না হওয়ায় হতাশ কৃষক I

Spread the love

 

নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে এম রুহুল আমিন প্রধান>
চলতি আমন মৌসুমে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট এ চার উপজেলায় কৃষকেরা ভালো উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে জমিতে রোপন করেছিল সুগন্ধি ব্রি ধান৩৪। শুরু থেকেই বিভিন্ন রোগবালাই বিশেষ করে মাজরা পোকা আর ইঁদুরের উপদ্রোপে আমন ফসল কাঙ্খিত উৎপাদন না পাওয়ায় হতাশ হয়েছে উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকা কৃষক সাধারণ। উৎপাদন উপযোগী কৃষকেরা জানায় প্রতিবছরের ন্যায় এ সুগন্ধি ধান বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় রোপন করেছিল তারা। কিন্তু মাজরা পোকা সম্পর্কে কৃষকের সঠিক ধারণা না থাকায় আর পোকা নিধন প্রতিরোধক ঔষধ কাজ না করায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এবিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার ৭নং দাউপুর ব্লকের ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমানের পুত্র সাজেদুর রহমান জানান, তার ৫বিঘা জমিতে সুগন্ধি ব্রিধান৩৪ রোপন করেছিলেন। প্রথম থেকেই মাজরা পোকা বিভিন্ন ভাবে তার ফসল কেটে তসনছ করে দেয়। পোকা দমনে বাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পনীর ঔষধ ক্রয় করে জমিতে স্প্রে করেছিলেন কিন্তু সফলতা তো দুরের কথা সুফল পাননি তিনি। এদিকে একই উপজেলার ৩নং গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের শওগুনখোলা গ্রামের মৃত আফসার আলীর পুত্র কৃষক আফজাল হোসেন জানান তার রোপন করা ৫বিঘা জমিতে উৎপাদন আশানুরুপ হয়নি। তিনি কয়েকবার পোকা দমনে স্প্রে করেছিলেন। এবিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাজরা পোকার আক্রমনে ব্রি-৩৪ সুগন্ধি ধানে কিছু ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ ধরণের সমস্যা পরিলক্ষিত হওয়ায় ইউনিয়ন পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরী পরামর্শ করে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। এর কারণেও কিছু কিছু জায়গায় ভালো উৎপাদন হয়েছে। তবে মাজরা পোকার বিষয়ে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে কৃষক প্রশিক্ষণ সহ প্রচারনা চেয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। একই কারণে জেলার বিরামপুর, হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট উপজেলায় ব্রি-৩৪ ধানে উৎপাদন কম হচ্ছে।
অন্যদিকে দিনাজপুরের হাকিমপুরে ইদুরের আক্রমণ ও রোগ বালাইয়ে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে আমন ধানের । দুঃচিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। ফুতি পোকা, ল্যাদা পোকা, মাজরা পোকার সঙ্গে যোগ হয়েছে পাতা মোড়ানো পোকার। বিভিন্ন রকম কীটনাশক ছিটিয়েও লাভ হচ্ছে না। চাষীরা বলছে, সপ্তাহ দুয়েক পরেই ধানের শিষ আসবে এমন সময়ে ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমনে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। এ অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তাদের সাহায্য মিলছে না বলে অভিযোগ তাদের। অন্যদিকে কৃষি-কর্মকর্তাদের দাবি, তারা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন এবং পোকার আক্রমণে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, পর্যপ্ত বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় হাকিমপুর উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। উপজেলায় চলতি মৌসুমে এবার আমন ধানের চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২১০ হেক্টর । যা গত বছরের চেয়ে ৫ হেক্টর বেশী। পুরো মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলনেও রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী কৃষিবিভাগ।

 


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।