ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওয়তায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষ, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধীসহ ৫৬৭টি ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারকে পাকা ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। ২১ সালের জানুয়ারী মাসের মধ্যেই এসব ঘর ও দুই শতক জমির দলিলসহ সুবিধাভোগীদের হাতে হস্তান্তর করা হবে। সব ঠিক থাকলে এ মাসেই এসব সুবিধাভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বপ্নের নীড়ে পরিবার নিয়ে উঠতে পারবেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আজিজুর রহমান জানান, ঘোড়াঘাট উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫৬৭টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এসব ঘর করতে সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে ৯ কোটি ৬৯ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। এ টাকায় তাদের জন্য ২০ ফুট বাই ২২ ফুট প্রস্থের ঘরে রয়েছে ২টি কক্ষ, ১টি রান্নঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা।
শনিবার (১৬ই জানুয়ারি) উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ঘুরে দেখা গেছে, বরাদ্দকৃত ৫৬৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। ঘর গুলোতে শোভা পাচ্ছে মেরুন ও নীল রঙের টিনের ছাউনি। গুণগত মানসম্মত এ ঘরগুলো অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। সারাদেশের ন্যায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ভূমিহীন ও গৃহহীনরা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন দেখতে শুরু করেছে। সুবিধাভোগীদের এখন অপেক্ষার পালা প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বপ্নের নীড়ে উঠার জন্য।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার পাকা ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়নের কলাবাড়ী গ্রামের জয়নাল আলী, তিনি বলেন- জীবনেও ভাবিনি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাকা ঘরে সারা জীবন থাকতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী মায়ের মতো কাজ করেছে। নিজের মতো করে এখন পরিবারকে নিয়ে থাকতে পারবো। এর চেয়ে খুশি আর কি থাকতে পারে। তার চোখে মুখে যেন খুশির ঝিলিক।
অপর এক সুবিধাভোগী উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী চন্দ্রভানু কান্নায় জর্জরিত কন্ঠে জানান, স্বাধীনতার পর এক কন্যা সন্তান রেখে তার স্বামী মারা যান। সেই থেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন করেছেন। পরে তার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর তিনি একা হয়ে পড়েন। কোন মত কুঁড়ে ঘরে জীবন যাপন করেন। তিনি আরও বলেন, বাড়ি পেয়ে মুই খুশি, হামি স্বপ্নেও ভাবনি কোনদিন ইটের বাড়ি পাম। প্রধানমন্ত্রীর জন্য মুই দোয়া করছো।
এ বিষয়ে বুলাকিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহফুজার রহমান জানান, ইউএনও মহোদয় কাজের গুণগতমান ঠিক রাখতে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আশ্রায়ণ কেন্দ্রের ঘরগুলোর নিয়মিত তদারকি করছেন যাতে এ মুজিববর্ষে গৃহহীনদের একটা মানসম্মত ঘর উপহার দিতে পারেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাফিউল আলম জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য উপহার স্বরূপ এসব আশ্রয় স্থল করে দিচ্ছেন। এর ফলে সমাজের অবহেলিত মানুষগুলোর সামাজিক মূল্যায়ন বৃদ্ধি সহ প্রাত্যহিক জীবনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে। সময় মতো কাজ শেষ করার পাশাপাশি নির্মাণ কাজের গুণগত মান ঠিক রাখতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন