ঘোড়াঘাটে জমি লেখে দিয়েও স্থান হলো না ভাই ভাতিজার ঘরে হালিমার ।

Spread the love


ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ভাই ভাতিজাকে জীবনের শেষ সম্বল সাড়ে ১৬ শতক জমি লেখে দিয়েও ভাই ভাতিজার ঘরে স্থান হলো না এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা হালিমার (৮০)।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলার দামোদরপুর শৌলা গ্রামের মৃত রজব আলীর প্রথম স্ত্রী হালিমা খাতুন তার কোন সন্তান না থাকায় স্বামী রজব আলীর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রজব আলীর দ্বিতীয় পক্ষের এক ছেলে আতিয়ার রহমান ও এক মেয়ে জহুরা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর হালিমা খাতুন প্রতিপালিত হয়ে আসছিলেন সতীনের ছেলে মেয়েদের কাছেই।
হালিমার স্বামী জীবিত থাকাকালীন তার শেষ সম্বল সাড়ে ১৬ শতক জমি অন্যের কাছে বন্ধক রেখে যায়। রজব আলীর মৃত্যুর পর সতীনের ছেলে আতিয়ার তার কষ্টার্জিত অর্থে জমিটির বন্ধকী ছাড়ান। এ সুযোগে হালিমার আপন ভাই মোসলেম উদ্দিন ও ভাতিজা ইব্রাহিম সুকৌশলে হালিমাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হালিমার শেষ সম্বলটুকু তাকে লালন-পালনের আশ্বাসে কবলা দলিলমূলে রেজিষ্ট্রি করে নেয়।
কিন্তু পরবর্তীতে ভাই ভাতিজা তাকে লালন-পালন না করায় আবার ফিরে আসে সতীনের ছেলে-মেয়েদের কাছে। ভ্যান চালক আতিয়ার ও তার বোন জহুরা একমাস করে বৃদ্ধা মাকে লালন-পালন করে আসছিলেন। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ্য হওয়ায় বৃদ্ধা মাকে দেখাশোনা করার লোক না থাকায় আতিয়ার তাকে ২৭ শে মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় কয়েকদিনের জন্য একই গ্রামে হালিমার ভাই মোসলেম উদ্দিনের বাড়িতে ভ্যানযোগে পাঠায়। একই দিন রাত গভীর হলে মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম আপন ফুফু হালিমাকে ভ্যানযোগে একই গ্রামের ঝিনাইগাড়ি বিলের মোড়ে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চলে যায়। বিষয়টি গ্রামের লোকজনদের মাঝে জানাজানি হলে জনৈক এক ব্যক্তি জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে। পরে খবর পেয়ে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অসুস্থ্য বৃদ্ধা হালিমাকে রাস্তার ধার থেকে তুলে নিয়ে এসে ঘোড়াঘাট হাসপাতালে ভর্তি করে দেন এবং তার সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। রবিবার (২৮ শে মার্চ) দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকর কোন এক মাধ্যমে জানতে পেরে হালিমা খাতুনকে নগদ অর্থ সহায়তা দেন এবং তাকে একটি সরকারি ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

একই দিন বিকেলে বৃদ্ধা হালিমাকে ডেকে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম ২ বস্তা শুকনা খাবার প্রদান করেন ও বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়াও ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন বৃদ্ধা হালিমাকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করেন। পাশাপাশি হালিমা খাতুন যতদিন বেঁচে থাকবেন সিংড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মন্ডল ২০ কেজি করে চাল দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।