লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামে ধান চাল সংগ্রহে অতিরিক্ত টাকা নেযার অভিযোগ I

Spread the love

এ,এল,কে খান জিবু# লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে অনিয়ম। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের ধান ও চাতাল মালিকদের চাল খাদ্য গুদামে নিয়ে গুদামের কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বস্তা প্রতি বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। তাই খাদ্য গুদামে ধান ও চাল দিতে আগ্রহী নন অনেকেই। ফলে চলতি মৌসুমে সদর খাদ্য গুদামে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের জন্য সরকার প্রতি মন ধান ১ হাজার ৮০ দরে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এর অংশ হিসেবে লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামে কৃষকদের নিকট থেকে ১ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু খাদ্য গুদামে ধান দিতে এসে নানা রকম হয়রানি ও বাড়তি টাকা নেওয়ার কারণে কৃষকরা আর খাদ্য গুদামে আসছেন না। ফলে চলতি মৌসুমে মাত্র ৭৪২ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করেছে সদর খাদ্য গুদাম।

অপরদিকে মিল-চাতাল মালিকরা অনেকেই সদর খাদ্য গুদামে চাল দিতে আগ্রহী নন। খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুজ্জামানের অশোভনীয় ব্যবহার ও তার নির্দেশে শ্রমিকরা বাড়তি টাকা নেওয়ার কারণে ইতোমধ্যে কিছু মিল-চাতাল মালিকরা সদর খাদ্য গুদামে চাল দেওয়া বন্ধ করেছেন। তারা বাড়তি গাড়ি ভাড়া দিয়ে তিস্তা খাদ্য গুদামে চাল দিচ্ছেন। ফলে চলতি মৌসুমে লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান অর্জন হবে না আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া অবৈধ পন্থায় কৃষকদের ধান, চাতাল মালিকদের কাজ থেকে ক্রয় করে প্রতি টনে ১ হাজার টাকা করে বাড়তি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
মোগলহাট ইউনিয়নের ক্ষুদ্র কৃষক আব্দুল মালেক জানান, তিনি এ বছর খাদ্য গুদামে কোন ধান দেননি। তার ধান মশিউর নামে এক ব্যক্তি দিয়েছেন। বিনিময়ে তাকে ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মশিউর কিভাবে ম্যানেজ করছে তা তিনি জানেন না। তিনি শুধুমাত্র ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে ছিলেন।
লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুজ্জামানকে অফিসে না পাওয়ায় তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনিয়মের বিষয়ে মোবাইলে কিছু বলা ঠিক নয়। কিছুক্ষণ পরে অফিসে আসেন বসে কথা বলা যাবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল হক জানান, খাদ্য গুদামে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে কিছু জানি না। তবে সদর খাদ্য গুদামে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করেছে কিছু মিল-চাতাল মালিকরা। এরমধ্যে গত মৌসুমে কয়েকটি মিল-চাতাল সদর খাদ্য গুদামে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করে তিস্তা খাদ্য গুদামে চাল দেন। আর চলতি মৌসুমে যে সকল মিল চাতাল মালিকরা সদর খাদ্য গুদামে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করেছে। তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সদর খাদ্য গুদামে চাল দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা ছিল না। তবে এখন বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।