নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর)থেকে এম রুহুল আমিন প্রধান :
ছুটির ঠিক আগে হঠাৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজির সাংসদ শিবলী সাদিক। শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসলেন মিলনায়তনে। প্রত্যেকের হাতে দেওয়া হলো একটি করে সাদা পাতা। এরপর লিখতে বলা হলো প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনের লক্ষ্য, ব্যক্তিগত আর্থিক অসংগতি, এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে।
প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী সেসব লিখে দিলেন জমা। মিলনায়তনে বসেই প্রতিটির শিক্ষার্থীর লেখাগুলো পড়লেন সাংসদ শিবলী সাদিক। বাছাই করলেন সেরা চব্বিশ জনকে। নয়জন শিক্ষার্থীকে নিজ পছন্দ অনুযায়ী তাৎক্ষনিকভাবে কিনে দিলেন ঈদের পোশাক। ১৫ জনকে পুরষ্কার দিলেন বঙ্গবন্ধুর “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” বই।
আজ সোমবার বেলা ১১ টায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া স্কুল এন্ড কলেজে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সাংসদের এমন অনুপ্রেরণামূলক তাৎক্ষনিক অনুষ্ঠানে খুশি শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবক।
বিরামপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক এ.এস.এম আলমগীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. আমির হোসনে, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম সবুজ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহ আলমগীর হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক মো. শামীম হোসেন, ভাদুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জামাল বাদশা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী জানায় যে, তাঁর বাবা নেই। তারা তিন ভাই বোন। তার একজন প্রতিবন্ধি ভাই আছে। কিন্তু তার মায়ের পক্ষে তাঁদের লেখা পড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। বিষয়টি আজ সাংসদকে কাছে পেয়ে জানালে তার লেখাপড়ার দায়িত্ব সাংসদ বহন করার ঘোষণা দেন। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেদি হোসেন জানায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার মহেশপুর গ্রামে এলাকায় একটি ড্রেন না থাকায় পুরো বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। গ্রামবাসী দীর্ঘদিনথেকে স্থানীয় দীর্ঘদিন থেকে জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোন কাজ হয়নি। তাই সে সরাসরি সাংসদকে এ সমস্যার কথা বলবেন বলে বহুদিন থেকে মনস্থির করে রেখেছিলো। কিন্তু কোন ভাবেই বলা সম্ভব হচ্ছিলোনা। আজ সাংসদকে এভাবে নিজ বিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে তা ভাবতেই পারছিলো না। আজ সাংসদ কে ড্রেেেনর বিষয়টি জানালে সাংসদ অতি দ্রæত তাঁর গ্রামে ড্রেন করার ঘোষণা দেন।
ভাদুরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, সাংসদ শিবলী সাদিক আজকে যে কর্মসূচীটি পালন করেছেন তা অত্যন্ত ব্যতিক্রমি এবং অনুপ্রেরণামূলক। সাংসদ আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল সকল শিক্ষার্থীর লেখাপড়া দায়িত্ব নেবার ঘোষণা দেওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীই নতুন জীবন পাবেন। সাংসদকে কাছে পেয়ে তাদের মনের কথাগুলো বলতে ও লিখতে পারায় শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব এবং প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
সাংসদ শিবলী সাদিক জানান, আজকের শিক্ষার্থীরাই তো আগামী দিনের ভবিষ্যত। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত ভাবনাগুলো, ভবিষ্যত স্বপ্নপূরনে প্রতিবন্ধকতাগুলো জানতে এবং একজন সাংসদ হিসেবে সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে তাঁর আসনের প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত স্বপ্ন পূরনে যথাসাধ্য সহযোগিতা করতে আজকের এ আয়োজন। আগামীতে এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
নবাবগঞ্জে এমপি শিবলী সাদিকের সাথে শিক্ষার্থীরা বললো কথা মন খুলে, পেলো পুরষ্কার ।
Newer Postনবাবগঞ্জে পুষ্টিকর গো-খাদ্য বিতরণ
মন্তব্য করুন