নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে এম রুহুল আমিন প্রধান :
১৭শত কোটি টাকার মাষ্টার প্লান ইতোমধ্যেই সম্পণ হয়েছে। আশুড়ার বিলের দৃশ্যমান অবকাঠামো উন্নয়ন করা হলে উত্তর জনপদের হাজার হাজার শিক্ষিত নারী পুরুষের নতুন কর্মসংস্থান তৈরী হবে। এতে একদিকে যেমন রংপুর বিভাগের অবহেলিত জনগোষ্ঠির উন্নয়ন হবে অপরদিকে সরকারের এ মেঘা প্রকল্প আলোর মুখ দেখলে এখান থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়ে সরকারের কোষাগারে জমা হবে বলে এমন মন্তব্য করেছেন এলাকার সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। বর্তমান নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ সোম স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের সঠিক দিক নির্দেশনা অনুসরন করে ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমানের সহায়তায় সরকারের এ মেগাপ্রকল্প যেন উত্তরাঞ্চল সহ রংপুর বিভাগের ভাগ্যের উন্নয়নের চাকা ফিরে দাঁড়াবে। এ মেগা প্রকল্পটি দেশের সুনামধন্য একটি ফার্ম মাষ্টার প্লান প্রস্তুত করে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের হাতে ন্যাস্ত করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাষ্টার প্লান প্রাপ্তির বিষয়টি স্বিকার করে গণোমাধ্যম কে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃ পক্ষ বাস্তবায়নের জন্য দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় করেছেন। জেলা প্রশাসক অত্যন্ত নিবিড় পর্যালোচনা করে সুচিন্তিত মতামত সন্নিবেশিত করে সরকারের বাস্তবায়ন কর্তৃ পক্ষের বরাবরে প্রেরণ করবেন বলেও তত্বটি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার । দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বিখ্যাত আশুড়ার বিলে নির্মিত হয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের শাল কাঠের আঁকাবাঁকা সেতু। পর্যটকদের প্রাধান্য দিয়ে উপজেলা প্রশাসন এটি নির্মাণ করেছে। নাম রাখা হয়েছে ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেতু’।নবাবগঞ্জ ও বিরামপুর উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নবাবগঞ্জ অংশের ২৫১ হেক্টর এবং বিরামপুর অংশের ১০৯ হেক্টর নিয়ে মোট ৩৬০ হেক্টর এলাকাজুড়ে এই আশুরা বিল। এখানে বিভিন্ন দেশীয় মাছসহ লাল খলশে, কাকিলাসহ আট প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ পাওয়া যায়। এই বিলের তিন দিক ঘিরে আছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শালবন। আর এই বনেই আছে অনন্য প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন সীতারকোর্ট বিহার। যা নিয়ে ‘সীতার বনবাস’ কিংবদন্তি রয়েছে।নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯০০ মিটার। সম্পূর্ণ শাল কাঠে নির্মিত এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। সময় লেগেছে দুই মাসের মতো। এটি পূর্ব-পশ্চিমে নির্মিত। সেতুটির আকার দেওয়া হয়েছে ইংরেজি বর্ণ জেড এর মতো। যা সেতুটির বেশ কয়েটি জায়গায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেতুটির পশ্চিমে খটখটিয়া কৃষ্ণপুর ও পূর্ব দিকে নবাবগঞ্জ। ফলে এই দুই অংশের বাসিন্দারাও সেতুটি ব্যবহার করতে পারবেন। উপজেলা প্রশাসন বলছে, এত বড় কাঠের সেতু উত্তরবঙ্গে নেই।এদিকে নবাবগঞ্জ বিট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫১৭.৬১ হেক্টর সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান। ২০০৮ সালে এটি জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। তবে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হলেও বরাদ্দ না দেওয়ায় তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই বনে শাল ছাড়াও সেগুন, গামার, কড়ই, জামসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ প্রজাতির গাছগাছড়া রয়েছে।দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ শিবলী সাদিক বলেন, একসময় শাপলা-পদ্মে ভরা এই আশুড়ার বিলে অতিথি পাখি আসত। কালের বিবর্তনে এই বিল তার ঐতিহ্য হারিয়েছিল। তবে উপজেলা প্রশাসন বিলটিকে সংস্কার করে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনছে। বিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ, উন্নত শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এটিকে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করছেন বলে উল্লেখ করেন।
মন্তব্য করুন