আলুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াই আলুর ফলন ও দাম নিয়ে আশঙ্কায় জয়পুরহাটের কৃষকরা ।

Spread the love

 

 

 

 

ওমর আলী বাবু, জয়পুরহাট প্রতিনিধি :

আলু উৎপাদনে দেশের বৃহতম জেলা জয়পুরহাট। জয়পুরহাটে বেড়েছে আলু উৎপাদন খরচ, আলু ফলন ও দাম নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে জেলার কৃষকরা। আলু বীজ ও সার সংকট থাকায় বেশি দাম কিনতে হচ্ছে আলুচাষীদের সার ও বীজ। এ জন্য এবার আলুর বীজ এবং সারের দাম বেশি হওয়ায় আলু চাষও গত বারের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এ জেলার উৎপাদিত আলু দেশের চাহিদা মিটিয়ে, বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে আগাম জাতির আলু লাগানো শেষ হয়েছে। এখন চলছে অন্যান্য জাতের আলু লাগানোর ভরা মৌসুম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় আলু চাষের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ৩শ’৬৫ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ল্যমাত্রার শতকরা ৬৩ ভাগ অর্থাৎ প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে ইতোমধ্যে আলু রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে বাকি আলু রোপণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মজিবুর রহমান জানান, জাতীয় ভাবে কিছুটা ল্যমাত্রা কমানো হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে এবারে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর কম। গত বছর এ ল্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার হেক্টর জমি। আর এবার ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ হাজার ৩শ’৬৫ হেক্টর জমি। এছাড়াও কৃষকদের আমরা আলুর পাশাপাশি সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। কৃষক পর্যায়ে সরিষা চাষের জন্য সরকার প্রনোদনাও দিয়েছে। এজন্য আলু চাষের ল্যমাত্রা গত বারের তুলনায় কম ধরা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাঠে মাঠে চাষিরা এখন আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ চাষ দেওয়ার আগে, জমিতে জৈব এবং রাসায়নিক সার ছিটিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ মেসি বা পাওয়ার টিলার দিয়ে আলু রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। কেউবা রোপণ করছেন আলু। আবার কেউ জমিতে সেচ দিচ্ছেন।

জয়পুরহাট সদরের কড়ই উত্তর পাড়া গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল বলে, ‘এবার আমি মাত্র এক বিঘা জমিতে গ্যানোলা জাতের আলু চাষ করেছি। প্রতি বস্তা আলুর বীজ কিনেছি ১ হাজার ৬শ’ টাকায়। সারও কিনেছি চড়া দামে। গত বছরের চেয়ে এবার বিঘা প্রতি ৫-৬ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। আলু তোলার মৌসুমে, দাম ধানের মতন একটু বেশি পাওয়া গেলে সংসারের ঋণ-দেনাগুলো শোধ করা সহজ হবে।

একই গ্রামের মনোয়ার বলে, আমি এবার ৬ বিঘা জমিতে গ্রানোলা, অ্যাস্টেরিক, ক্যারেজ জাতের আলু লাগাইছি। বাড়ির বীজ। তাই খরচ একটু কম হচ্চে। আমার প্রতি বিঘায় খরচ পরবে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। বীজ কিনা লাগলে প্রতি বিঘায় খরচ হতো প্রায় ২৪-২৫ হাজার টাকা’।

সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ভোলা বলেন, এবার আলু চাষে খরচ হচ্ছে বেশি। কারণ ব্যবসায়ীরা চালাকি করে চড়া দামে সার ও বীজ বিক্রি করতেছে। সেচের জন্য জ্বালানী তেলের দামও বেশি। তাই এবার সবমিলিয়ে খরচ বেশিই হচ্ছে। শেষমেশ লাভ হবে না লোকসান হবে বোঝা যাচ্ছে না। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে লাভের আশায় আলু লাগাচ্ছি।

 

 

 


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।