আধুনিক তৈজসপত্রের ভীরে ভালো নেই জয়পুরহাটের মৃতশিল্পীরা I

Spread the love

ওমর আলী বাবু, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
প্লাস্টিক ও আধুনিক তৈজসপত্র ব্যাবহারের ভীরে জয়পুরহাটের মৃতশিল্পীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন । মাটির তৈজসপত্রের তৈরী করে একসময় বেশ ভালো ভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন পরিবার গুলো। বর্তমানে সেগুলোর চাহিদা কমে যাওয়ায় খুব কষ্টে জীবন যাপন করছেন তারা। একদিকে তৈজসপত্রের তৈরীর কাঁচামাল খরচ বেশি  অন্যদিকে চাহিদা ও পণ্যের দাম কম থাকায় তারা পরিবার নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে ।
একসময় জয়পুরহাটের পাড়া মহল্লায় অসংখ্য মৃতশিল্পি পরিবার মাটির তৈরী হাঁড়ি, পাতিল, প্লেট, বাটি,জগ, গ্লাস,কলসি,কাপ-পিরিচ,ব্যাংক, শোপিস,খেলনা,পুতুল,পিঠা তৈরির খরমা সহ নানা তৈজসপত্র তৈরী ও ব্যাবসায় যুক্ত ছিলো। ধীরে ধীরে প্লাস্টিক,সিলভার,মেলামাইন,সিরামিক,স্টিল সহ আধুনিক তৈজসপত্রের ব্যাবহার ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধিতে তাদের ব্যাবসা একবারেই মন্দা। জয়পুরহাট শহরের তেঘর পালপাড়ায় এক সময় এ পেশায় যুক্ত ছিলো শতাধিক পরিবার। কিন্তু বর্তমানে তাদের ব্যাবসায় মন্দা ও ধস নামায় যুক্ত আছে ২০ থেকে ২৫ টি পরিবার। জেলা জুড়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ধীরে ধীরে মৃতশিল্পীদের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় কেউ অন্য পেশায় যাচ্ছে আবার কেউ কোনো ভাবে পূর্বপুরুষের এ পেশা ধরে রেখেছে। তাদেরর ব্যাবসা ভালো না হওয়ায় অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারের সহযোগীতা চান তারা।
কুমার পাড়ার মৃতশিল্পী অর্পন্না রানি পাল, নয়া দিগন্ত কে বলেন বর্তমান প্লাস্টিক,সিলবার,স্টিল,মেলামাইনের তৈজসপত্র ব্যাবহার বৃদ্ধি হওয়ায় আমাদের কর্ম দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। আগের মতো মাটির জিনিসপত্র আর ব্যাবহার হয় না। আমরা খুব কষ্টে আছি।
তেঘর পালপাড়া গ্রামের মিরা পাল নয়া দিগন্ত কে  বলেন, মাটি ও জালানীর দাম বেশি আমাদের পণ্যের দাম কম। বিভিন্ন সমিতি ও এনজিও থেকে কিস্তির টাকা নিয়ে ব্যাবসা করি কিন্তু ব্যাবসা খারাপ হওয়ায় আর কিস্তিও ঠিক মতো দিতে পারি না।
 দিপালি পাল ও চন্দ্রনাথ পাল  নয়া দিগন্ত কে বলেন, আমরা খুব কষ্টে জীবন যাপন করতেছি। এ পেশার উপর দিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া ও সংসারের সমস্ত খরচ চালাইতে হয়।  বাপ দাদার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতেও পারছি না আবার ছাড়তে পারছি না। কারণ আমরা তো অন্য কাজ জানিনা। তাই সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করতো তাহলে আমরা টিকে থাকতাম।
বিসিক শিল্পনগরী উপ ব্যাবস্থাপক, লিটন চন্দ্র ঘোষ নয়া দিগন্ত কে বলেন এ জেলার ধীরে ধীরে মৃতশিল্পীরা কমে যেতে বসেছে। তার পরও কিছু মৃতশিল্পী এ পেশা ধরে রেখেছেন । তাদের তৈরী পণ্য আধুনিকায়ন ও বাজারজাতের জন্য প্রশিক্ষন ও আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে বিসিকের পক্ষ থেকে তা করা হবে।

Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।