ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি.
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ফারহানা আক্তার চুমকি হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচিত। পরিকল্পনাকারীসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত একটি নোহা মাইক্রোবাস (যার রেজি নং-ঢাকা মেট্রো-চ-১১-৯৭৯৬) সহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে পুলিশ গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়নের মোজাম বিনোদন পার্কের সাড়ে ৩শ গজ দূরে অপর একটি আম বাগান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। জয়পুরহাট সদর এলাকার বাসিন্দা মোখলেসুর রহমান তার মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শাহ ইফতেখার আহম্মেদ পিপিএম- এর নির্দেশনায় ঘোড়াঘাট থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান আসাদ ও তার বিশেষ টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ২ আগস্ট হত্যা মামলার মূল আসামীর সহযোগী এমদাদুল হককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরের দিন ৩ আগস্ট হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী প্রধান আসামী সাবেক চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক ও গাড়ীর ড্রাইভার এমদাদুল হককে জয়পুরহাট জেলা থেকে গাড়ী সহ গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা হত্যাকান্ডের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, মামলার বাদীর মেয়ে ফারহানা আক্তার ওরফে চুমকি (৩৫) কে নিয়ে তার স্বামী মোঃ এজাজুল হক ওরফে সনি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বর্গাহাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় ৩/৪ বৎসর যাবৎ বসবাস করে আসছিলেন। মোঃ এজাজুল হক ওরফে সনি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করে।
সেই সুযোগে সনির স্ত্রী ভিকটিম ফারহানা আক্তার চুমকির সাথে আসামী মোঃ আঃ রাজ্জাক এর প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে আসামী মোঃ আঃ রাজ্জাক কে ২০২০ সালে ফারহানা আক্তার চুমকিকে গোপনে বিবাহ করে। বিবাহকে কেন্দ্র করে আব্দুর রাজ্জাক ও চুমকির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয। সামাজিক ও পারিবারিকভাবে সম্মান হানি হওয়ায় ফারহানাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আব্দুর রাজ্জাক।
সেই মোতাবেক ঘটনার আগের দিন (২৭জুলাই) হত্যার পরিকল্পনাকারী আব্দুর রাজ্জাক ভিকটিমকে বিয়ের কথা বলে মাইক্রোবাস যোগে ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ এলাকায় নিজ বাড়ী থেকে নিয়ে আসার পথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আঃ রাজ্জাকসহ তার দুই সহযোগী মিলে গলায় নাইলনের রশি দ্বারা পেচাইয়া শ্বাসরোধ পূর্বক হত্যা করে। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে আম বাগানের পার্শ্বে লাশ ফেলে যায়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মামলার মূল আসামী জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ছাতিনালী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ৮নং আওলাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক, তার সহযোগী একই এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে এমদাদুল হক (৪৮) ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের ড্রাইভার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণপুর মরিচা গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে এমদাদুল (৪৫)।
মন্তব্য করুন