মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে স্বরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত হোসেনI

Spread the love

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃওমর আলী বাবু I
জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে স্বরণীয় করে রাখতে বীর বাঙালী নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে জয়পুরহাট  সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত হোসেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মহৎ কাজটি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জয়পুরহাট সদর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবিত ও যুদ্ধাহত  প্রত্যক্ষ বর্ননা স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যমে  মুক্তিযুদ্ধের খন্ড খন্ড ইতিহাস ও স্মৃতির ডিজিটাল  সংকলন তৈরি এবং তা ভবিষ্যত প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার একটি ক্ষুদ্র প্র‍চেষ্টা হলো
” বীর বাঙালী”।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত হোসেন এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে এই তথ্যচিত্র টি প্রকাশিত হচ্ছে।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন  জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আমজাদ হোসেন, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সন্মেলন পরিষদের সভাপতি আমিনুল হক বাবুল,  বম্বু ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান, আমিনুর রহমান সুইট, শারমিন আক্তার নিশা,ওমর আলী নয়ন প্রমুখ।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন মহান স্বাধীনতা অর্জন। আর  বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন এই স্বাধীকার আন্দোলনের বীর সেনানী। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান তাতে বিশ্ব মানচিত্রে যতদিন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন তাদের কৃতজ্ঞতা চিত্তে এই জাতি তাদের স্মরণ করবে। স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৫২ বছর পরে আজ অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাই আমাদের মধ্যে থেকে বিদায় নিয়েছেন। ইতিমধ্যে বয়সের ভারে ন্যূব্জ অনেকেই হয়তো আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নেবেন। জয়পুরহাট সদরে সর্বশেষ হিসাব মতে, ৯৪ জন জীবিত এবং ২২ জন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাগন মহান মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ এর রণাংগনে কোথায় কিভাবে যুদ্ধ করেছেন তার বিস্তারিত বর্ননা ডিজিটালী অডিও- ভিডিও ফরম্যাট সংরক্ষণ করার উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত হোসেন জানান সদর উপজেলার বর্তমানে জীবিত  বীর মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধের ইতিহাস তাদের প্রত্যক্ষ বর্ননায় ভিডিও ধারনের উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। একসময় হয়তো সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাগন মারা যাবেন। তাই জীবিত থাকাকালীন তাদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা অতি জরুরী। কারন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাবার সাথে সাথে তার যুদ্ধকালীন ইতিহাস হারিয়ে যাবার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে সকল মুক্তিযোদ্ধা মারা যাবার পর পরবর্তী প্রজন্ম এক সময় আর কোন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংস্পর্শ পাবে না। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উতসরিত করার জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।
বর্তমানে মুক্তিযোধাদের সংখ্যা জীবিত ৯৪ জন এবং যুদ্ধাহত ২২ জন। তথ্য চিত্রটি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংগ্রহণকারী এবং প্রান উৎসর্গকারী সকল শহীদের তরে উৎসর্গকৃত।
জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী বলেন  প্রাথমিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন ইতিহাস তাদের নিজস্ব বর্ননায় ভিডিও ধারন করা হচ্ছে। পরবর্তিতে এই ইতিহাসকে লিখিতভাবে সংকলন আকারে জয়পুরহাটের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হিসেবে প্রকাশনা করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
এই ভিডিও ধারণের মাধ্যমে  জয়পুরহাট সদর উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাস আছে তা বর্তমানে জীবিত সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ বয়ানে ধারন করতে পারলে পরবর্তী প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বন্ধে যেমন জানতে পারবে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের খন্ড খন্ড ইতিহাস সংরক্ষন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
ভিডিও ধারনের স্থান ছিল জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, পাগলা দেওয়ান বদ্ধভূমি চকবরকত, কড়ই-কাদিপুর বদ্ধভূমি (বম্বু)।

Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।