নাটক সিনেমায় উপেক্ষিত শুদ্ধ বাংলা  ।

Spread the love

নাটক/সিনেমা দেখার খুব একটা সময় হয় না। তবে ছুটির দিনগুলোতে বা বিভিন্ন অকেসনে টিভি সেটের সামনে বসে দুই/একটি নাটক বা সিনেমা উপভোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ নাটকে ব্যবহৃত ভাষা না সঠিক আঞ্চলিক, না প্রমিত বাংলা। মনে হয় নতুন আরেকটি ভাষা তৈরি করছেন তারা।
Drama  is the reflection of the society. (নাটক সমাজের প্রতিচ্ছবি)। শ্রোতা/ দর্শক নাটক /সিনেমা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়। নাটক/সিনেমায় ব্যবহৃত ভাষা, চরিত্র এবং বিষয়বস্তু দর্শক/শ্রোতা  তার নিজের জীবনে বাস্তবায়নে চেস্টা করে। সেই ভাষা বা বিষয়বস্তু যদি আমাদেরকে ভিন্ন কোন দিকে বা তৃতীয় কোন দিকে নিয়ে যায়, সেটি আমাদের জন্য অবশ্যই কল্যাণকর নয়।
ভাষা সচেতন মহল বলেন, যে কোনো সংস্কৃতিচর্চার জন্য ভাষা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ভাষার অপপ্রয়োগে অধঃপতন হতে পারে অনেক শক্ত ও মজবুত শিল্পেরও। সেই অধঃপতনের দিকেই যেন হাঁটছে এ দেশের সিনেমা/ নাটক শিল্প! সত্তর থেকে নব্বই দশকে আমাদের নাটক /সিনেমায়  ভাষার যে শাণিত উচ্চারণ ও আবেদন ছিল, কালক্রমে তা হারিয়ে গেছে। সেখানে দখল নিয়েছে আঞ্চলিক ভাষাগুলো। সেগুলোও উঠে আসছে ভুল উচ্চারণ ও অর্থ নিয়ে। নানা দোহাই ও অজুহাতে ঠাঁই পাচ্ছে অশ্লীল সংলাপও যা কাররই কাম্য নয়।
 আজকাল বাস্তবতার দোহাই দিয়ে জাঁকজমক আয়োজনে মানহীন গল্প ও সংলাপে নাটক নির্মিত হচ্ছে। সেখানে বিকৃত ভাষা স্থান পাচ্ছে। সাময়িকভাবে মানুষ সেটা লুফে নিলেও তা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না।  সে কারণে কখনও বরিশাল, কখনও ময়মনসিংহ, কখনও পুরান ঢাকা, কখনও বা নোয়াখালী বা রংপুরের  ভাষার ওপর দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। কোথাও স্থির  হওয়া যাচ্ছে না।
আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতায় বাংলায় নির্মিত নাটকগুলো প্রমিত ভাষা ব্যবহারের কারণে তারা যেমন দর্শক প্রিয়তা  পাচ্ছে,  তেমনি সেগুলি দীর্ঘস্থায়ী  হচ্ছে। যদিও তাদের উচ্চারণ ভঙ্গি কিছুটা কলকাতা কেন্দ্রিক।
আঞ্চলিকতা মানে সংকীর্ণতা নয়। আঞ্চলিক ভাষায় করা নাটক/ সিনেমায়  বোধগম্যতা থাকতে হয়। আঞ্চলিকতার ঘ্রাণ থাকবে ঠিকই, বোঝা যাবে কোন অঞ্চলের সংলাপ, কিন্তু তা অন্যের জন্য যেন দুর্বোধ্য না হয়।
নাটক/ সিনেমায় গল্পের বিষয়বস্তুর  প্রয়োজনে আঞ্চলিকতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আঞ্চলিকতা যখন প্রমিত বাংলা বা বিশুদ্ধ বাংলাকে ছাপিয়ে যায়, তখন সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে নাট্যকার, শিল্পী, কলাকুশলী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আরো সচেতন হবেন, আরও আন্তরিক হবেন এমনটিই প্রত্যাশা করে দেশের ভাষা  সচেতন দর্শক/শ্রোতা।
মো: মিজানুর রহমান
সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি)
Email:pressmizan1980@gmail

Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।