আজব দেশ! যেখানে ৪+৬=৬ ?

Spread the love

 

 

সব সম্ভবের দেশ; আমার সোনার বাংলাদেশ। যেদেশে ছয়ের সাথে চার যোগ করলেও যোগফল ছয়ই হয়! যোগ – বিয়োগের এই ব্যাখ্যা দেওয়ার পূর্বে একটু বলতে চাই –  দেশের ৯৭ শতাংশ শিক্ষা ব্যবস্থা মূল চালকের ভূমিকায় বেসরকারি শিক্ষকরা। তাই শিক্ষার মান উন্নয়নে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সম্মান, মর্যাদা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এর সাথে এমপিও ভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ জরুরি। যথাযথ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আনা সম্ভব। মেধাবী শিক্ষকরাই ভবিষ্যৎতে উপহার দিবে শিক্ষিত জাতি।

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের শুনানি শেষে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভুক্ত পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারীর বেতনের অংশ কেটে নেওয়ার বিপরীতে আর্থিক ও অবসর সুবিধা নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়ার বিষয়ে করা রিটের রায় ঘোষণা  করা হয়।

সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে  শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রায়ে দেশের এমপিও ভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারীকে ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।  রায়ের পর সন্তুষ্টি জানিয়েছিল রিটকারি শিক্ষক নেতারা।

রায়ের পর আইনজীবী মো: ছিদ্দিক উল্লাহ  মিয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা, ১৯৯৯ এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা, ২০০৫’ এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষকদের মূলবেতনের  ২ শতাংশ + ৪ শতাংশ কাটার বিধান ছিল।

“যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল হতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের  কিছু আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল উল্লেখিত প্রবিধানমালাগুলোর শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের দুই শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধানগুলো সংশোধন করে ৪ শতাংশ + ৬ শতাংশ করে কাটার দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি  করা হয়।”

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এই অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোন বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি বলে জানান মো: ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।

রিটের রায় ঘোষণা হলেও অদ্যাবধি  এর সুবিধা কোন শিক্ষক কর্মচারী পাচ্ছেন না।

চলতি বছরের আগস্ট মাসের ৫ তারিখে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলে আশায় বুক বাঁধেন বেসরকারি  শিক্ষক কর্মচারীগণ। বর্তমান সরকার অতিরিক্ত ৪ শতাংশ  কর্তন বন্ধ অথবা তার বিপরীতে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করবেন এমনটিই প্রত্যাশা করেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ৯৭% অবদানকারী শিক্ষক – কর্মচারীগণ।যেখানে ৪ শতাংশ +৬শতাংশ = ১০ শতাংশই হবে; থাকবেনা কোনো নয়-ছয় ।

যেদিন শিক্ষকের উন্নত জীবন মান দেখে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবে, সেদিন থেকেই আমার বাংলাদেশ; সোনার বাংলায় পরিনত হবে।

মোঃ মিজানুর রহমান

সহকারী অধ্যাপক ( ইংরেজি)

 


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।