ঘোড়াঘাটের ভিক্ষুক আবু সাইদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি বাড়ি চান I

Spread the love

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় একটি বাড়ি চান ভিক্ষুক আবু সাইদ। আবু সাইদ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার কৃষ্ণরামপুর মাটাল পাড়া গ্রামের আসকর আলীর ছেলে। আবু সাইদ জন্ম থেকেই অন্ধ। তার বয়স বর্তমানে ৩০ বছর। তার বোধ-বুদ্ধির পর থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। প্রতিদিন সকালে গলায় মেমোরি বক্স ও এক হাতে থালা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। সারাদিন ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে তার সংসার চলে।
পরিবারে স্ত্রী ও দুই জন সন্তান ব্যাতিত আর কেউ নেই। বড় ছেলে আক্তারুল (৮) ও ছোট ছেলে সিফাত (৯ মাস) কে নিয়েই তার সংসার। একমাত্র সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুর, রাণীগঞ্জ বাজার, ঘোড়াঘাট বাগেরহাট, নবাবগঞ্জের ভাদুরিয়া, বিরামপুর ও হাকিমপুরে আশে পাশের এলাকাগুলোতে কোথাও না কোথায় তাকে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। জন্ম থেকে অন্ধ ভিক্ষুক আবু সাইদ এসব এলাকার জনসাধারণের কাছ থেকে নিজের কন্ঠে ধারনকৃত মেমোরি বক্স বাজিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।
এলাকার অনেকেই তাকে চেনে। অনেকেই আবার অন্ধ ভিক্ষুক আবু সাইদকে নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে স্ট্যাটাস দেন তাকে সহযোগিতা করার জন্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু সাইদ চোখে দেখে না জন্ম থেকেই। চেনা জানা নেই রাস্তাঘাটও। সেই বাল্যকাল থেকে অন্যের হাত ধরে চেনা হয়েছে কেবল বাড়ি থেকে অন্যের সহযোগিতায় ও অনুমানের ভিত্তিতে ঘোড়াঘাটসহ আশেপাশের উপজেলা গুলোতে আসা যাওয়া।
ভিক্ষা করতে এখন তার কারো সহায়তা নিতে হয়না। তিনি চোখে না দেখলেও জন্মের পর থেকেই মনের চোখ দিয়ে ও অনুভুতি দিয়ে অনেক কিছুই দেখেন। আবু সাইদকে এখন ঘোড়াঘাট সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার অনেকের কাছেই এক পরিচিত মুখ। দুর থেকে মেমোরি বক্সের মাধ্যমে কন্ঠ শুনলে অনেকেই বুঝতে পারে আবু সাইদ এসেছে। স্থানীয়রাও তাকে সাধ্যমত সহযোগিতা করে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে মেমোরি বক্স বাজিয়ে ভিক্ষা করার সময় আবু সাইদের সঙ্গে দেখা হলে তিনি দৈনিক যায়যায়দিন’কে জানান, তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঝড় বৃষ্টিতে ভাঙ্গাচুরা চাটাই ও টিন দিয়ে তৈরি জরাজীর্ণ একটি বাড়িতে জীবনের ঝুকি নিয়ে থাকতে হয়। এসময় তিনি আরও জানান, সারাদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পান। যা দিয়ে সংসার চলে যায়। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় একটি বাড়ি পেলে পরিবারের সদস্যের নিয়ে ভালো ভাবে থাকতে পারবেন।
এ বিষয়ে বুলাকীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহফুজার রহমান জানান, আবু সাইদ জন্ম থেকেই অন্ধ। বর্তমানে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে ভিক্ষা বৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৭ শতক জমির ওপর তৈরিকৃত ভাঙ্গাচুরা জরাজীর্ণ একটি বাড়ি করে বসবাস করছেন। তবে আবু সাইদের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড রয়েছে। সাইদকে একটি বাড়ি করে দেওয়া হলে পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে ভালো থাকতে পারবেন ।


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।