ওমর আলী বাবু, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
প্লাস্টিকের ভীরেবাঁশের তৈরী তৈজসপত্রের চাহিদ্ াদিন দিন কমে গেছে। পূর্ব পুরুষের এ পেশায় একসময় বেশ ভালো ভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন জয়পুরহাটের মাহালী পরিবার গুলো।বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ায়মানবেতর জীবনযাপন কাটাচ্ছেতারা। একদিকে বাঁশের দাম বেশিঅন্যদিকেচাহিদা ওপণ্যের দাম কম থাকায়তারা পড়েছেন চরম বিপাকে ।প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা আশ^াস সংশ্লিষ্ঠদের।
জয়পুরহাটেরবিভিন্ন গ্রাম গঞ্জেহাজার হাজার মাহালী পরিবার একসময়বাঁশের মাচা, মই, মাদুর, ঘর, ঝুড়ি, ফাঁদ, মাছ ধরার চাঁই,জুইতা, বাঁশের দোচালা, চারচালা ও আটচালা ঘর, বাঁশের বেড়া, ঝাপ, বেলকি, দরমা, বর্শা, ঢাল, লাঠি, তীর, ধনুক ও বল্লম ছাইদানি, ফুলদানি, প্রসাধনী বাক্স, ছবির ফ্রেম, আয়নার ফ্রেম, কলমকাল্লোং, বারেং, পুল্লেং, ডুল, কুলা, ডুলা, লেই, তলই, সেরি, তেরা চেই, বিজন, খারাং, মারাল্লে, দোলনা, সাম্মোকুলা, ঝুড়ি ,টোপা, মাথল, চাটাই, শরপোস, চাঙ্গারী, ডালি ,খলই, চালুন, সহ আরো অনেক কিছু তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করত।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদশা মাহালি পাড়ায়, খঞ্জনপুর মাহালী পাড়া, পাচবিবি উপজেলার দমদমা ও আয়মা রসুলপুরের মাহালী সম্প্রদায় সহ জেলা বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জের কয়েক হাজার নারী ও পুরুষেরা এসব বাশের তৈরী জিনিস পত্র করতেন ও সেগুলো স্থানীয়রা ব্যাবহার করতেন, তাদের ব্যাবসা ভালো চলত। কিন্তু ধীরে ধীরেকালের বিবর্তনেপ্লাস্টিক ও অনন্যজিনিস পত্রের ব্যাবহার ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধিতে তাদেরব্যাবসা ধস একেবারেই মন্দা।পূর্ব পুরুষের এ পেশা ছেড়েও দিতে পারছেন না, আবার অন্য পেশায়যেতেও পারছেন না। আবার অনেকে চলে গেছে অন্য পেশায়।অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারের সহযোগীতা চান তারা।
জয়পুরহাটের খঞ্জনপুর ও ভাদশার মাহালী পাড়ার সুবাস চন্দ্র, ধীরেন, রতন, জগেস,নিরেন,সুশান্ত পাচবিবির দমদমা ও আগাইড় গ্রামের সুরেন্দ, খগেন, পরিতস,বিমল চন্দ্র জানান, একটি বাশ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, সেই বাশ দিয়ে ২ দিনে তৈরী করি দুটি চাঙ্গারি, সে দুটি চাঙ্গারি বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়। তাহলে আমাদের মজুরি কোথায় লাভ কোথায়। প্লাষ্টিক ও অনন্য জিনিস পত্র ব্যাবহার বেশি হওয়ায় আমাদের বাশের তৈরী জিনিস বিক্রি ঠিকমতো হয় না। আমরা অনেকে এখন ঠিক মতো খাইতেও পারিনা খুব কষ্টে জীবন কাটাচ্ছি। বারে বারে সাংবাদিকেরা আসে কিন্তু কোনো লাভ ই হয় না। সরকার ত আমাদের সহযোগীতা করেনা।
ভাদশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন স্বাধীন বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচুর মানুষ বাশের তৈরী এ শিল্পে যুক্ত ছিলো কিন্তু বর্তমানে এসবের ব্যাবহার কমে যাওয়ায় তারা খুব কষ্টে জীবন যাপন করছে। সরকারী ভাবে কোনো সাহায্য সহযোগিতা আসলে আমরা তা করে থাকি । তবে এ শিল্পেকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের আরো বেশি সাহায্য সহযোগীতা করা দরকার।
পাচবিবি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, এ বাশের শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদেরকে ১৫ দিনের প্রশিক্ষন দিয়েছি এবং সরকারী সাহায্য পেলেই তাদের উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।
জয়পুরহাট বিসিক শিল্পনগরী উপ ব্যাবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষন ও তারা চাইলে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন