ওমর আলী বাবু, জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের শুরুতেই শীতকে উপেক্ষা করে ইরি-বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার বাজারে আমন ধানের দাম ভাল পাওয়ায় ইরি-বোরো ধান চাষে আগে ভাগে শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোমর বেঁধে মাঠে কাজ করছেন জেলার কৃষকেরা। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩০ ভাগ জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। এদিকে রোপনের জন্য শ্রমিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি কারণে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ঔষুধের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান চাষে বিঘা প্রতি ১ হাজার ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে বলে কৃষকেরা জানান।
জেলা কৃষি অদিপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি মৌসুমে ৬৯ হাজার ৭শ’ ৫০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো রোপন করা হয়েছে। জেলায় এবার উফশী ও হাইব্রিড জাতের জমিতে ধান রোপণ করা হচ্ছে।
আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুরের কৃষক শ্রী অসিম চন্দ্র জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছি। এই জন্য অধিকাংশ জমিতেই ধান রোপণের জন্য চেষ্টা করছি।
সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের মোজাম্মেল হক জানান, শ্রমিক সংকট, কীটনাশক ঔষুধের দাম বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলক‚পের মাধ্যমে পানি সেচ নেওয়ায় আমাদের ধান চাষে বিঘা প্রতি ১হাজার ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। এসবের দাম কমে গেলে আমাদের ধান চাষে অধিক লাভবান হব বলে আশা করি।
পাঁচবিবি উপজেলার করিয়া গ্রামের বোরো চাষী কুতুবুল আলম ও বীরনগর গ্রামের ইব্রাহিম মাস্টার জানান, শীত-কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহর কারণে বোরো আবাদ প্রায় ২০ দিন পিছিয়ে গেছে। শীত কমে যাওয়ায় এখন বোরো আবাদে মাঠে নেমেছি, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে শ্রমিক নিয়ে। এ বছর কৃষি শ্রমিকের মূল্য বেশি। তারপরেও ক্ষেতে মজুর পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কিছুটা শঙ্কার মধ্যে পড়েছি আমরা।
কালাই উপজেলার কৃষক আব্দুন নূর জানান, ৪ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধানের আবাদের করেছি। আবহাওয়া অনুক‚ল ভাল থাকলেও এ বছর ইরি-বোরো ধান চাষে খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে দিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে তাই খানিকটা চিন্তিত আছি।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর জয়পুরহাট এর উপ-পরিচালক মোছাঃ রাহেলা পারভীন জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৯ হাজার ৭শ’ ৫০হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে ৫০হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে ইরি-বোরো চাষ বেশি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। উফশী জাতের ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৮, ৮৯ এবং হাইব্রিড ব্রি ধান ১০০ জাতের চাষ হচ্ছে। ইরি-বোরো ধান চাষে সুষমের মাত্রায় সার দেওয়ার জন্য ও সঙ্গে সঙ্গে লাইন, লোগো এবং পাসিং করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন