জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ওমর আলী বাবুI
জয়পুরহাট জেলায়এবার ভুট্রা চাষ লক্ষ্যমাত্রার চেয় বেশি চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। চলতি২০২২-২৩ রবি মৌসুমে ৭শ৮৫হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধাররে বিপরীদে এবার ৮শ ৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এতে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানাগেছে, জয়পুরহাটের মাটিগুণাগুণ অনুযায়ী ভুট্টা চাষে বেশ উপযোগী হওয়ায় জয়পুরহাট সদর উপজেলা, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ বেশি হয়ে থাকে। পোল্ট্রি শিল্পের মূল উপাদানভুট্টা উৎপাদনের খরচের তুলনায় লাভ ভালো থাকায় কৃষকদের ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বিএডিসির পক্ষ থেকে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ভুট্টা বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে তুলনামূলক সেচ খরচ ও পরিচর্যা খরচ কম হওয়ার লাভ হয় বেশি। সদর উপজেলার দাদরা গ্রামের কৃষক আলম, দিপু, মিঠু সহ একাধিক ভুট্টা চাষির সাথে কথা বললে জানায়,ফলন ভালো ও ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিবারের মতো এবারও ভুট্টার চাষ বেশি করেছি। ভুট্টা স্বল্প পানির চাহিদা সম্পন্ন ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। ভুট্টা আবাদে বীজ বপনের আগাছা দমন, ২৫ থেকে ৩০দিন পর ১ম বার সেচ প্রয়োগ এবং ৫০ থেকে ৫৫ দিন পর ২য় বার সেচ দিতে হয়, আবার ৭০ থেকে ৭৫দিন পরে ৩য় বার হালকা সেচ প্রয়োগ করলে হয় আবার না কররে ও চলে। রোগ বালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম হয় ভুট্টাতে। ফলে জেলায় দিন দিন ভুূট্টার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলায় ৮ শ ৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮ শ ৫৫ হেক্টর জমিতে । যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হেক্টর অতিরিক্ত। ভুট্টা ফসলের মোচা বা কব সংগ্রহের পরে গাছের অবশিষ্ট অংশ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়, ভুূট্টার আটা, ময়দা, গো খাদ্য তৈরীতে দেশে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। মুরগি ও গো- খাদ্য তৈরির জন্য জয়পুরহাটের ফিডমিল গুলোকে জেলার বাইরে থেকে ভুট্টা আমদানী করতে হয়। আমদানী রোধে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধিতে জয়পুরহাট জেলায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: কায়ছার ইকবাল। কৃষকদের মাঝে উন্নত জাত সরবরাহ, উদ্ধুদ্ধকরণ ও পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলায় সুপারসাইন-২৭৬০ জাতের ভুট্টার নতুন জাত প্রবর্তনে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন । এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করার জন্য কৃষি প্রণোদনা কর্মসূিচর আওতায় প্রতিজন ভুট্টা চাষিকে ২ কেজি বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ও ২০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। জেলায় এবার এক হাজার চািষকে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় মোট ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার সার, বীজ ও পরিবহন খরচ দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে প্রযুক্তিগত কলাকৌশল ও পরামর্শ পেয়ে চাষাবাদ করতে পেরে অত্যন্ত খুশী বলে জানান ভুূট্টা চাষিরা ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন বলেন, জেলায় এবার ৮ শ ৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে জেলায় এবার প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টার উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন