নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর)থেকেমোঃ মাহাবুবুর রহমান :
দেশের স্বাধিনতা আর্জনে যাঁরা অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেদের জীবন এর কারণে অর্জন হয়েছে স্বাধিনতা। সে পরিবারের একটি বেদনাদায়ক নাম দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ২নং বিনোদ নগর ইউনিয়নের কঁপালদাঁড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ও মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বক্কর মুন্সী। ১৯৭১সাল ২২ শে সেটেম্বের। সকাল ৯টায় গ্রামের উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকা কৃষকেরা যখন ফসল ফলাতে কাক ডাকা ভোরে মাঠে যান ব্যবসায়ী ও মসজিদের ইমাম আবু বক্কর মুন্সীও জীবন জীবিকা নির্বাহের তাগিদে চলে যান বাড়ির পার্শ্ববতী খিরকিনি গ্রামের মাঠে। আবু বক্কর মুন্সীর ছেলে ব্যবসায়ী মো: আনোয়ার হোসেন জানান হঠাৎ ১৫ থেকে ২০ জনের পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা গ্রামে ঢুকে শুরু করে লুটতরাজ সহ অরাজকতা। প্রতিবাদী ও ন্যায় পরায়ন আবু বক্কর মুন্সী এমন সন্ত্রীসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নেন অবস্থান। পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা আবু বক্কর মুন্সীর এমন দৃঢ়তা আর প্রতিবাদী কন্ঠ একদম নিভে দিতে বদ্দ পরিকর। কেউ তাকে ডাকে আবার কিছু সদস্য বন্ধুকের গুলি তার দিকে তাক করে থাকে। যারা জীবনের বিনিময়ে হলেও ন্যায়ের কাতারে সামিল থাকতে চান ওই সমস্ত বীরেরা পায়না মৃত্যুকে ভয়। গ্রামের মানুষ একের পর এক জড় হতে থাকে বাড়ি সংলগ্ন নদী সাঁতার কেটে পাক সেনাদের মুখোমুখি পৌঁছে যান আবু বক্কর মুন্সী। আর দেরী নয় সাথে সাথেই শুরু করে মারপিট। হাত দুটি পিঠের পেছনে মুড়িয়ে বেঁধে নিয়ে যায় তাকে। অনেক খুজাখুজির পরও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার। এদিকে বিরামপুর এলাকায় নবাবগঞ্জ উপজেলার এডভকেট মতিয়ার রহমান দেখে ফেলে আবু বক্কর মুন্সীকে এমন সংবাদটিও তার ছেলে আনোয়ার হোসেনকে দেন মতিয়ার রহমান। এর পর কোথায় কিভাবে তাকে নির্মম ভাবে অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যা করে ফেলে দেয় পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর সদস্যরা এমন ধারনা করে তার পরিবার ও এলাকাবাসী। এদিকে তার পরিবার সহ আতœীয় স্বজনেরা অনেক খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পর্যন্ত পাননি। এখনো পথ পানে চেয়ে আছে তার স্বজনেরা কবে আসবে না আসবেই না আবু বক্কর মুন্সী। দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭৫সাল পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোকাহত ওই পরিবারটিকে পূর্নরবাসনের জন্য আর্থিক সহায়তা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কেউ আর্থিক সাহায্য তো দূরের কথা খোঁজও রাখেনি। । বাবার শোক নিয়ে বেঁচে আছেন আবু বক্কর মুন্সীর ৪ ছেলে মো: আজিজুল হক , মো: আফজাল হোসেন , মো: আনোয়ার হোসেন, মো: আমানত আলী ,৫ মেয়ে মোছা : রশিদা খাতুন , কহিনুর বেগম , সাহারা খাতুন , আয়শা খাতুন ,মেয়েদের মধ্যে আয়েশা খাতুন মুত্যু বরন করেছে। তার সন্তান আনোয়ার হোসেন সহ তার পরিবারের সকলের দাবী তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
মন্তব্য করুন