দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে ৪ ইউনিয়নের দেড় হাজার ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন ।। ৫০কিরোমিটার বাধ ঝুকিপুর্ণ ।

Spread the love

নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর) থেকে এম রুহুল আমিন প্রধান :
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর , বিনোদ নগর , কুশদহ ,মাহমুদপুর ৪ ইউনিয়ন হয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি আর বর্ষণের কারণে বর্ষা মৌসুমে ভরে যায় নদী এর কারনে দাউদপুর ইউনিয়নের সিরাজ ফকিরপাড়া ,বালুয়াপাড়ার এবং গাবগাছী, বিনোদনগর ইউনিয়নের ভোটারপাড়া ,চাকপাড়া , মাঝিপাড়া ,মাহমুদপুর ইউনিয়নে পাঁচটি গ্রাম ও কুশদহ ইউনিয়নের দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ নদী সংলগ্ন কৃষি আমন ফসলের ধান পানির নিচে পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এদিকে নবাবগঞ্জ থেকে দাউদপুর হয়ে মামুদপুর থেকে ঘোড়াঘাট পর্যন্ত ৫০কিমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত মাটির বাঁধ রয়েছে ঝুকিপুনর্ বলে ষাটউর্দ্ধ সোলায়মান আলী জানান বাধটি ৫০বছর আগে বাধা হয়েছিল বর্তমানে পূর্ণ সংস্কার ও সর্ম্পুুরক সংস্কার করা না হলে বাধা ভেঙ্গে করতোয়া নদীর পানি সিরাজ ফকিরপাড়া মাঠে ঢুকে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমির ফসল নষ্ট হবার আশংকা রয়েছে। জাতের ঘাট গ্রামের মাজহারুল ইসলাম লিটন জানান দ্রুত ভেঙ্গে যাওয়া ঘরবাড়ি নির্মান সহ বাধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন তিনি ।
করতোয়া নদীভাঙনে হারিয়ে যেতে বসেছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের ফসলি জমি। প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার হুমকির মুখে। নদীর গতি পরিবর্তন করতে পারলে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার হোসেন জানান। ভাঙনের কবলে গ্রামগুলো হলো- উপজেলার বিনোদনগর ইউপির করতোয়া নদী ঘেঁষা ভোটারপাড়া, কাঁচদহ, উ. কাঁচদহ, উ. মাঝিপাড়া ও দ. মাঝিপাড়া।ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, করতোয়া নদীর প্রবাহ ছিল তাদের গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার পূর্ব দিক দিয়ে। সেই প্রবাহ ভাঙতে ভাঙতে এখন কয়েক বছরে গ্রাম পর্যন্ত ভাঙা শুরু হয়েছে। এতে করে অনেকের বাড়িঘরসহ জায়গা জমি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছে। আবার নদীভাঙনে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে হয়েছে ভোটারপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম, মুনছুর আলী, ইয়াকুব আলীসহ প্রায় ৫০টি পরিবারকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হুমকির মুখে রয়েছে ওই গ্রামের আজিজুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার।এ ছাড়াও ভাঙনের কবলে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে।বিনোদনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সানাউল হক জানান, উত্তর থেকে ঘ্রিনাই ও যমুনাশ্বরী নদী এসে ভোটারপাড়া এলাকায় করতোয়ায় মিলিত হয়ে পানির তীব্র স্রোতে এসব ভাঙন হয়ে থাকে।এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ফতে জানান, প্রতি বছর নদী যেভাবে গ্রাস করছে তাতে শুধু ওই গ্রামগুলোই নয়, নদীর গতি পরিবর্তন করতে না পারলে সদ্য নির্মিত ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতুও ভবিষ্যতে হুমকির সম্ভাবনা রয়েছে।তবে তিনি বলেন, নদী পূর্বে যেদিক দিয়ে প্রবাহিত ছিল সেদিকে প্রবাহের ব্যবস্থা করা হলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। এর জন্য প্রায় পাঁচ কিমি নদী খনন করতে হবে। এ ব্যাপারে তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদনও করে ছিলেন। সম্প্রতি নবাবগঞ্জ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। গত ১৬ জুলাই ২০১৮ ক্ষতিগ্রস্থ ও ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, নির্বাহী অফিসার মো. মশিউর রহমান, কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মো. আসাদুজ্জামান,   উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. পারুল বেগম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রেফাউল আজম, প্রকৌশলী মো. আ. কুদ্দুস, বন কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার, বরেন্দ্র উপ-সহকারী মোকছেদ আলী।এ ছাড়াও নদীভাঙন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। পরিদর্শনকালে দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উ-সহকারী প্রকৌশলী এম এ রউফ ও আ. মালেক হাওলাদার জানান, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে করতোয়া নদীর ভাঙ্গনে বাড়ি ঘর ভাঙ্গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন শতাধিক পরিবার। আতঙ্কে অনেকেই ভিটে মাটি ছাড়িয়ে আশ্রয় নিয়েছে অনত্র। হুমকির মুুখে আছে বাড়ি ঘর, মসজিদ, কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কিছু স্থাপনা। কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার শংঙ্কা স্থানীয়দের। তবে ব্যবস্থা নেওার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের সিরাজ, ফকিরপাড়া, বালুয়া এবং জাতেরঘাট গ্রামের শতাধিক পরিবার ঘর বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরে মসজিদ, কবরস্থানসহ একরে পর এক বাড়ি করতোয়ার বুকে বিলিন হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় শতাধিক পরিবার। চলতি মাসে উজানের পানি বয়ে এসে হুমকির মুখে রয়েছে আরও কয়েকশ বাড়িসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনেকেই ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন নিরাপদ জায়গাই। ভাঙ্গন ঝুকিতে থাকা বসত ভিটা হারানোর আতঙ্কে দিন কাটছে অসংখ্য পরিবারের। ভিটে মাটি রক্ষায় করতোয়া নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: নজমুন নাহার এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সরোজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আতাউর রহমান জানান ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়ন করে কর্তৃপক্ষের বরাবরে জানাবো । এ বিষয়ে দিনাজপুর ৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: শিবলী সাদিক জানান আমার নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে ঘোড়াঘাট উপজেলায় বন্যার পনিতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার ৪ ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে তিনিও তদন্ত করে আর্থিক সহায়তা করবেন।


Spread the love

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।