ঘোড়াঘাট ( দিনাজপুর) থেকে মোঃ শফিকুল ইসলাম।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে গৃহবধু পেয়ারা বেগমের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উম্মোচিত করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় স্বামী আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করে দিনাজপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আব্দুস সালাম (২৭) নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনে পেয়ারা বেগমের ২য় স্বামী। নিহত পেয়ারা বেগম (৩৭) জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার আবাদপুর গ্রামের মৃত মিরাজ সিকদারের মেয়ে।
আজ শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে ঘোড়াঘাট খানার ওসি আজিম উদ্দিন জানান, কয়েক বছর আগের সন্তান রেখে পেয়ার বেগমের প্রথম স্বামী মারা যায়। দীর্ঘ কয়েক বছর একা থাকার পর আব্দুস সালামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সে।
আব্দুস সালাম দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলায় ওয়ালটন কোম্পানীতে চাকরি করত। কিন্তু অভাব অনটন সহ নানা সমস্যায় পারিবারিক অশান্তি চলছিল তাদের সংসারে। অভাব মেটাতে গত রোববার (৪ অক্টোবর) ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পেয়ারা বেগম কে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে থেকে রওনা দেন সালাম। পথিমধ্যে বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে রাতের বেলা ঘোড়াঘাট-হিলি সড়কের সূরা মসজিদ এলাকায় নিয়ে এসে রুটি খাওয়ার কথা বলে রাস্তার পাশে ঝোঁপের ধারে বসে তারা দুজন। এই সময় স্ত্রী পেয়ারা বেগমের শরীরে থাকা ওড়না গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় স্বামী সালাম।
পরের দিন গত রোববার (৪ অক্টোবর) সকালে স্থানীয় লোকজন অজ্ঞাত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। প্রাথমিক ভাবে পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় সিআইডি ও পিবিআই এর সহায়তায় প্রযুক্তির মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
তিনি আরো জানান, গত ৫ অক্টোবর পেয়ারা বেগমের ভাই মুনছুর আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তভার উপ-পরিদর্শক খুরশীদ আলম কে দেওয়া হয়। গত বুধবার (৭ অক্টোবর) সন্ধায় গোয়েন্দা তথ্য ও পারিবারিক তথ্যর উপর ভিত্তিতে মূল সন্দেহভাজন সালাম কে গ্রেপ্তার করে তারা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যায় দায় স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।
এ ঘটনায় পুলিশ একটি মোটর সাইকেল ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে।
মন্তব্য করুন